রূপশ্রী ডেস্ক
ঢাকা (২০ ডিসেম্বর ২০২৩) : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন খ্রিস্টান নারীর ভিডিও বার্তা সচেতন মহলে বেশ সারা ফেলেছে। ইসরাইলের নির্বিচার বিমান হালায় যখন ফিলিস্তিনের শিশু ও নারীর অকাতরে প্রাণ হারাচ্ছে তখনই তার মনে প্রশ্ন জাগে-মানে কী? এত মৃত্যুর পরও ওরা ভয় পাচ্ছে না কেন? আর এভাবে নির্বিচারে শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে কেন? মুসলমানরা এমন কী যে এভাবে তাদের হত্যা করা হচ্ছে? কার্যত অব্যাহত গাজা যুদ্ধের কারণে ইসলাম ধর্মের প্রতি মানুষের কৌতুহল দিন দিন বেড়ে চলেছে। তারই সাক্ষ্য পাওয়া যায় এক মার্কিন তরুণীর কণ্ঠে। তিনি বলেছেন, ‘একজন মা হিসেবে সন্তানের লাশ বুকে নিয়ে আল্লাহর প্রশংসা করার মতো শক্তি ও ক্ষমতা আমার মধ্যে নেই। আমার কাছে এটা অবিশ্বাস্য মনে হয়। কিন্তু ফিলিস্তিনি মায়েরা তা পারছেন। তারা সন্তানের লাশ কোলে নিয়ে আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টি জ্ঞাপন করছেন। ফিলিস্তিনি মায়েরা কুরআন নিয়ে কথা বলছিল। তাই আমি দেখতে চাইলাম তারা যে কুরআন থেকে এত শক্তি পেয়েছে, সেই কুরআনে কী লেখা আছে? এই কুরআন তাদেরকে কীভাবে এত দৃঢ়তা দিয়েছে? এ কারণে আমি খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী হওয়ার পরও কুরআন হাতে নিলাম এবং কুরআন খুললাম। ভিডিও বার্তায় বলছিলেন তিনি।
এ বিষয়ে রেডিও তেহরানের অনলাইন পেইজে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। রূপশ্রীর পাঠকদের জন্য নিম্নে তা হুবহু তুলে ধরা হলো।
গাজায় এমন কোনো স্থান নেই যেখানে কোনো মানুষ নিরাপত্তাবোধ করতে পারে। হাসপাতাল, আশ্রয়কেন্দ্র, মসজিদ, গির্জা, স্কুল-কলেজ সব কিছুতে হামলা হয়েছে এবং প্রতিনিয়তই হামলা হচ্ছে।
এখনও যারা বেঁচে আছেন তাদের প্রাণটাও যেকোনো সময় কেড়ে নিতে পারে ঘাতক ইসরাইলের বুলেট বা বোমা। তবু গাজার মানুষগুলো অলৌকিক শক্তিতে শক্তিমান। গাজাবাসীদের এই শক্তি, এই মনোবল বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষের মধ্যে কৌতূহলের জন্ম দিচ্ছে। এমনি এক মার্কিন নাগরিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের কৌতূহলের কথা জানিয়ে ভিডিও প্রকাশ করেছে।
২৫ বছর বয়সী এই তরুণী গাজা পরিস্থিতি নিয়ে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছেন, ‘আমি একজন নারীর ভিডিও দেখেছি। ঐ নারী তার নিজের সন্তানের লাশ কোলে নিয়ে বলছিলেন (হে আল্লাহ) আমরা তোমার কাছ থেকে এসেছি, তোমার কাছেই ফিরে যাব। এ সময় এই নারী আল্লাহর প্রতি ব্যাপক সন্তুষ্টি প্রকাশ করছিলেন। আমি নিজে নিজে বলছিলাম এটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি এমন পরিস্থিতিতে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে পারব না। মনের ভেতর যে প্রশ্নটা উকি দিল তাহলো কীভাবে ঈমানকে এতটা মজবুত করা সম্ভব? এরপর আমি (মুসলমানদের) কুরআন পড়ার প্রতি আগ্রহী হই।’
গাজা যুদ্ধের কারণে পবিত্র ইসলাম ধর্মের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠা এই তরুণী আরও বলেছেন, ‘একজন মা হিসেবে সন্তানের লাশ বুকে নিয়ে আল্লাহর প্রশংসা করার মতো শক্তি ও ক্ষমতা আমার মধ্যে নেই। আমার কাছে এটা অবিশ্বাস্য মনে হয়। কিন্তু ফিলিস্তিনি মায়েরা তা পারছেন। তারা সন্তানের লাশ কোলে নিয়ে আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টি জ্ঞাপন করছেন। ফিলিস্তিনি মায়েরা কুরআন নিয়ে কথা বলছিল। আমি দেখতে চাইলাম তারা যে কুরআন থেকে এত শক্তি পেয়েছে, সেই কুরআনে কী লেখা আছে। এই কুরআন তাদেরকে কীভাবে এত দৃঢ়তা দিয়েছে। এ কারণে আমি খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী হওয়ার পরও কুরআন হাতে নিলাম এবং কুরআন খুললাম। প্রথম বাক্য পড়েই বাস্তবিক অর্থেই আমি বিস্মিত হয়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছে কুরআন সরাসরি আমার সাথে কথা বলছে। আমার কাছে মনে হচ্ছিল আল্লাহ কুরআনের বাক্যগুলোর মাধ্যমে আমার সঙ্গে কথা বলছে। সত্যিই তা আমার কাছে অবিশ্বাস্য ছিল।’
ভিডিওতে এই তরুণীর নাম উল্লেখ নেই, তবে তার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট গাজার মুসলমানদের ঈমানি শক্তি স্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়। আল্লাহর প্রতি তাদের বিশ্বাস এতটাই দৃঢ় যে, তারা মৃত্যুকে ভয় পায় না। তারা বিশ্বাস করে জালিম ও দখলদার ইসরাইলের বুলেট-বোমার আঘাতে যে শহীদি মৃত্যু হচ্ছে তাতে তাদের জন্য জান্নাতি দুয়ার খুলে যাচ্ছে।#