মীম সাবিহা সাবরীন

একটি মেয়ের হাজারো রূপ । কখনো সে সন্তান , কখনো মেয়ে, সহোদরা , বন্ধু , প্রেমিকা, প্রেয়সী , স্ত্রী , মা আবার কখনোবা ছলনাময়ী । নারীর হাজারো রূপ তাকে করে তুলেছে দুর্ভেদ্য , রহস্যময়ী , চির যৌবনবতী – যাকে সৃষ্টি সর্বদা কামনা করে ।

নারীর এই দুর্ভেদ্য দূর্গ জয়ের জন্য হাজারো পুরুষ তপস্যা করে । পাশাপাশি বিছানায় যুগ পার হয়ে যায়,  তবু কি সেই দুর্গেশনন্দিনীর দূর্গ বিজীত হয় ?? নাকি মূর্খের স্বরগ দর্শন !

নারী জন্মের প্রারম্ভ থেকেই শিখে তার তিন রূপ – কন্যা , জায়া , জননী । অবলীলাক্রমে বিনা বাক্যব্যয়ে একটি শিশু তার অজান্তেই বিশ্ব ভ্রম্মান্ড রক্ষার দায়িত্ব তার শিশুতোষ কাঁধে তুলে নেয় । নিজের ওজনের অধিক ভার নিয়ে অতীব ভালোবাসা স্নেহ দিয়ে তার বর্তমান সংসার পিতৃগৃহ আর পরবর্তীতে স্বামীগৃহ পরিচালনা করে । কারো কাছে কোন কিছু পাবার প্রত্যাশা না রেখেই ।

আত্ম ভুলে এই যে বিসর্জন, দুর্গেশনন্দিনীর অভেদ্য দূর্গের অপ্রতিরোধ্য দেয়ালের ভিতরে বন্দী হয়ে থাকা অজানা বিস্মৃত রহস্য কালের আবর্তে বারংবার বাক্যের রূপ পেতে চায় । কিন্তুক সমাজ সংসার এই বিশ্ব ভ্রম্মান্ড বরই পাষন্ড । মায়ের রক্ত শুষেই গেল , মায়ের দুঃখ শুধালো না । অব্যক্ত বেদনা কখনো চাপা আর্তনাদ , বুকফাটা দীর্ঘশ্বাস কখনোবা গরম জলে ঢাকা পরে যায় ।

আমি কারো কন্যা , কারো জায়া কারো বা জননী । আমি দুর্গেশনন্দিনী । আমি মরচে পরা, ঘুনে ধরা রূদ্ধদ্বার উম্মোচন করে অসূর্যস্পর্শা হূদয়ের শুদ্ধিস্মান করাতে এসেছি । কপট প্রণয়ের স্বাক্ষী হৃদয়ের জবানবন্দী শোনাতে এসেছি । আমার হৃদয় নিংরানো কথা বলতে এসেছি । কন্যা – জায়া – জননীর কথা শুনতে এসেছি, শুধাতে এসেছি ।

” দেখি তুলে তার বুকের আচ্ছাদন ..
সেখানে এখনো বাস করে কিনা মন ..
ন হন্যতে হন্য মান এ হৃদয়ের মাঝে যার
অজর অমর সত্তার সম্ভার ।।”