রূপশ্রী ডেস্ক
শনিবার, ১৬ই মে ২০২০, ঢাকাঃ
মায়াং কপাল। হাতিমুড়া সিঁড়ি। স্বর্গের সিঁড়ি।
স্বর্গের সিঁড়ি মর্ত্যভূমি পেরিয়েই উঠে গেছে সোজা উপর দিকে। পাহাড় আর জঙ্গলের ফাঁকফুঁকে চলা, এই সিঁড়ির শেষ দেখা যায় না। উপরে স্বর্গে গিয়েই যেনো শেষ হয়েছে সিঁড়িটা। খাড়া উঁচু পাহাড়ের সামনের দিকটা হাতির মাথার মত দেখতে হওয়ায়, স্থানীয় অধিবাসীরা এটাকে হাতিমাথা এবং হাতিমুড়া বলে ডাকে। চাকমা ভাষায় যার নাম- এদো সিরে মোন।
আনুমানিক ১১০ডিগ্রী এ্যাঙ্গেলের খাড়া ৩০০সিঁড়ি বেয়ে হাতি মাথায় উঠতে হবে। হিম শীতল বাতাসে সিঁড়ি বেয়ে যখন পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে থাকবেন তখন নৈসর্গিক সৌন্দর্যে চোখ ধাঁধা লেগে যাবে। চতুর্দিকে কেবল সবুজ আর সবুজ।
খাগড়াছড়ি জেলার উপজেলা সদরের পেরাছড়া ইউনিয়নের মায়াং কপাল বা হাতিমুড়া হল একটা উঁচু পাহাড়ি পথ। অনেকে একে স্বর্গের সিঁড়িও বলে থাকে। খাড়া পাহাড় ডিঙ্গিয়ে দুর্গম এই পথে যাতায়াত করে ১৫ টি গ্রামের মানুষ। এসব মানুষের জীবনযাত্রাকে একটু সহজ করার জন্য নির্মিত হয়েছে ৩০৮ ফুট লম্বা লোহার তৈরী এই সিড়ি।
কিভাবে যাবেনঃ
মায়াং কপাল / হাতিমুড়া যেতে হলে প্রথমে খাগড়াছড়ি সদর থেকে পানছড়ি যাওয়ার পথে জামতলীস্থ যাত্রী ছাউনির সামনে নামতে হবে। খাগড়াছড়ি সদর থেকে জামতলী পর্যন্ত গাড়ী ভাড়া জন প্রতি ১৫ টাকা। এরপর জামতলীস্থ যাত্রী ছাউনির বামদিকের রাস্তা ধরে সোজা গিয়ে চেঙ্গী খাল পার হয়ে ডান দিকে স্কুলের রাস্তার দিকে যেতে হবে। স্কুলের নাম পল্টনজয় সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়। ওখানে গিয়ে একটি দোকান পাবেন। দোকানের সামনে দিয়ে ডানের রাস্তা ধরে যেতে হবে। দুটি বাঁশের সাঁকো পার হতে হবে। এরপর ডানদিকে ছড়ার পাশ দিয়ে যে ছোট্ট রাস্তা গেছে, সেটি দিয়ে আরেকটি বাঁশ-গাছের সাঁকো পার হয়ে এবার সোজা পথ ধরে এগিয়ে যেতে হবে। এখানে বগড়া পাড়া নামে একটি পাড়া পড়বে। এরপর সামনে এগুলে বিস্তৃত ছড়া পড়বে। এরপর একটি বড় টিলা পার হতে হবে। এটি পার হলে একটি লোকালয় পাওয়া যাবে, যে এলাকার নাম কাপতলা। এরপর হাতের ডান দিকে নিচু পথ ধরে এগিয়ে যেতে হবে, যেতে যেতে সামনে দুইটি রাস্তা পাওয়া যাবে এবং ডান দিকের রাস্তা ধরে এগুতে হবে। এরপর দেখা মিলবে অসাধারণ মায়াং কপাল / হাতি মুড়া। সব মিলিয়ে পৌঁছাতে সময় লাগবে ঘন্টা দেড়েক।
চাইলে চেঙ্গি খাল পার হয়ে দোকানে কথা বলে, দরদাম করে একজন গাইড নিয়ে নিতে পারবেন, ঝামেলা এবং সময় বাঁচাতে। গাইড নিয়ে যাওটা সবচেয়ে ভালো কেননা সামনে কয়েকবারই ২টা করে রাস্তা পড়বে। এই সিঁড়িতে যাওয়ারও অনেকগুলা বিকল্প রাস্তা আছে।
ট্র্যাকিং মোটামুটি কষ্টের, কারন ছোটো খাটো পাহাড় পাড়ি দিতে হবে। সাথে করে অবশ্যই শুকনা খাবার ও পানি নিয়ে যেতে হবে।
সবশেষে, সৌন্দর্য্য অবলোকনের অধিকার সবার। কিন্তু নষ্ট করার অধিকার কারো নেই। যাত্রার পথে কোন রকমের আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন কিংবা সঙ্গে একটি ব্যাগ রাখতে পারেন, যাতে করে আবর্জনা ফেরৎ আনতে পারেন। হ্যাপি ট্রাভেলিং।
রূপশ্রী/এম