রূপশ্রী ডেস্ক
বুধবার (১০) মার্চ, ঢাকা:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নির্বাচনী প্রচারে নন্দীগ্রামে আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রশ্ন উঠেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতার নিরাপত্তা নিয়ে।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গতকাল স্থানীয় রানিচকে একটি মন্দিরে ‘হরিনাম সংকীর্তনে’ অংশ নিয়ে বের হওয়ার সময় চার-পাঁচজন ব্যক্তির ধাক্কায় পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। মাথায়, কপালে এবং পায়ে চোট পেয়েছেন তিনি। ডাক্তারের সাথে কথা বলে তাকে হেলিকপ্টারে করে দ্রুত কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে হেঁটে যাওয়ার মতো অবস্থায় ছিলেন না মমতা, তাই তাকে স্ট্রেচারে করে হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। তার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তৃণমূলনেত্রী অভিযোগ করেছেন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়ায় নির্বাচনী প্রচারণায় গেলে চক্রান্ত করে তাকে ধাক্কা মেরেছে চার-পাঁচজন।
ভারতের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, ভিড়ের মধ্যে তাকে চার-পাঁচ জন ধাক্কা দেয়। ষড়ষন্ত্রেরও অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এদিকে গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মমতা নিজেও অভিযোগ করেছেন, ঘটনার সময় কোনো পুলিশকর্মী বা জেলার পুলিশ সুপার কেউই ছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালও তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এক টুইটে বলেছেন, মমতা দিদির উপর আক্রমণের তীব্র নিন্দা করি। যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী তাদের শীঘ্রই গ্রেফতার করা উচিত এবং শাস্তি দেওয়া উচিত। আমি ওনার দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। এ ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় বইছে। তবে, বিজেপি এবং কংগ্রেস যদিও মমতার এই পড়ে যাওয়াকে ‘নাটক’ বলে মন্তব্য করেছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ২৭ মার্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন শুরু হচ্ছে। মমতা নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে বুধবার দুপুরে হলদিয়া মহকুমা অফিসে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে জমা দিয়েছেন। সেখানে মমতার প্রতিদ্বন্ধী এখন মমতার এক সময়ের বিশ্বস্থ শুভেন্দু অধিকারী; যিনি সম্প্রতি মমতার মন্ত্রিত্ব ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
নন্দীগ্রামে রাত কাটানোর কথা ছিল তার। বিকেলে তিনি যান রানিচক গিরি বাজার মন্দিরে। হরিনাম সংকীর্তনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখান থেকে বেরনোর সময় তিনি পড়ে যান। মমতা বলেছেন, ‘ভিড়ের মধ্যে ৪-৫ জন বাইরে থেকে ঢুকে পড়েছিল। ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় আমাকে। ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা মারা হয়। এর পিছনে ষড়যন্ত্র ছিল।’ পড়ে গিয়ে পা ফুলে গেছেন বলেও জানান মমতা। মমতা হাঁটতে পারছিলেন না। তাকে পাঁজাকোলা করে গাড়িতে তোলা হয়। বরফ দিয়ে বাঁ পায়ে জড়িয়ে দেওয়া হয় কাপড়। তার বাঁ পা ফুলে গেছে। চোট লেগেছে কপাল ও মাথায়। জ্বর জ্বর ভাবও রয়েছে। এমনকি বুকে ব্যথা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এসময় রানিচক থেকে গাড়ি করে মুখ্যমন্ত্রীকে তার অস্থায়ী ঠিকানা রেয়াপাড়ার বাড়িতে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি গাড়ি থেকে নামতে পারছিলেন না। পায়ে প্রচন্ড যন্ত্রণা হচ্ছে বলেও জানান। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে কলকাতায় নেয়োর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রূপশ্রী ডেস্ক/বিদেশ/আরএইচ