রূপশ্রী ডেস্ক
রবিবার, ১৭ই মে ২০২০, ঢাকাঃ এক দিনের ট্যুরে ঘুরে আসতে পারেন টাঙ্গাইলের বেশ কয়েকটি জায়গা।
আমরা এই ট্যুরে গিয়েছি –
১. মহেরা জমিদার বাড়ি
২.পাকুল্লা জমিদার বাড়ি
৩. দেলদুয়ার জমিদার বাড়ি
৪.করটিয়া জমিদার বাড়ি এবং
৫.আতিয়া মসজিদ।
এবার ট্যুরের বর্ণনা এবং খরচের হিসাব দিচ্ছি।
আমরা যাত্রা শুরু করি ভোর ৭টায় খিলক্ষেত থেকে। নিরালা বাসে উঠি ১৬০ টাকা করে। প্রায় ১.৫ ঘন্টা পর নন এসি বাস আমাদের নামিয়ে দেয় মহেড়া। মহেড়া নেমে রিকশা নেই ১০০ টাকা দিয়ে। সেই রিক্সা আমাদের নিয়ে যায় মহেরা জমিদার বাড়ি। খুব সকাল সকাল যাওয়ার কারণে একদম ভিড় পাইনি। সেদিন ছিল ১৬ ডিসেম্বর। এবার সবগুলো ভবন, পার্ক, পশুপাখি সবকিছু ঘুরে দেখি দুই তিন ঘণ্টা সময় নিয়ে। ফিরে আসার সময় এবার জায়গাটা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। অনেক মানুষ আসে। আমাদের ভাগ্য ভালো যে আমরা সকাল সকাল গিয়ে ঘুরে আসতে পেরেছি। হ্যালো রেস্টুরেন্টে গিয়ে ২৬০ টাকা দিয়ে সকালের নাস্তা করি।
এবার সেখান থেকে বের হয়ে সামনে একটা সিএনজি তে উঠি। একজন ৩০ টাকা করে এখান থেকে মেইন রোড যাই। এবার ৪০ টাকা দিয়ে রিকশা ভাড়া করে যাই পাকুল্লা জমিদার বাড়িতে। সেখানে একজন লোকের সাথে কথা হয়। তিনি আমাদের জানান যে এখানে জমিদারদের বংশধররা থাকেন এবং এটি বাস ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যেহেতু বাস গৃহ তাই আমরা ভিতরে না ঢুকে একটু চারপাশে ঘুরে আসি।
এবার সেখান থেকে দেলদুয়ার জমিদার বাড়ি যাওয়ার জন্য একটা অটোরিকশা রিজার্ভ করি। ভাড়া দেই ১০০ টাকা করে। সেখানে গিয়ে দেলদুয়ার জমিদার বাড়ি এবং দেলদুয়ার জামে মসজিদ দেখি। যাওয়ার পথে পথের দুই পাশে সরিষা গাছের দৃশ্য মন ভরিয়ে দেয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে জমিদারবাড়িতে তালা পাই তাই আর জমিদার বাড়িতে ঢুকতে পারেনি। মসজিদ দেখে চলে আসি। তাই সবার প্রতি সাজেশন থাকবে যে দেলদুয়ার জমিদার বাড়িতে আসলে সময় নষ্ট করা ছাড়া কিছু নেই। কারণ আমরা ভিতরে যেতে পারিনি।
এবার সেখান থেকে ৪০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে যাই শতবর্ষী আতিয়া মসজিদ দেখতে। বাংলাদেশের দশ টাকার নোটের মধ্যে এর ছবি রয়েছে। এখানে কিছুক্ষণ মসজিদের ভিতরের অসাধারণ স্থাপত্য এবং গঠন শৈলি উপভোগ করি। এখানে মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা করবেন এবং প্রেমিক-প্রেমিকা যুগল এখানে আসার জন্য মানা করা হচ্ছে। খুব বেশি শব্দ না করার এবং মসজিদের ভিতরে অজু ছাড়া প্রবেশ না করার জন্য বলা হয়েছে। এই কথাগুলো আমার না, সেখানে দেওয়ালে টাঙানো লেখা দেখে বলা। মসজিদের অপজিট পাশেই একটা গম্বুজের মত দেখলাম সেখানে ঘুরতে গিয়ে দেখলাম যে পাশে খুব সুন্দর গ্রামের দৃশ্য। ঢাকা শহরে থেকে এসে এরকম গ্রামের দৃশ্য দেখে মনটা ভরে গেল এবং এখানেও কিছুক্ষণ সময় কাটালাম এবং কিছু ছবি তুললাম।
এবার আতিয়া মসজিদ থেকে ৪০ টাকা করে দুইজন অটো নিয়ে এ বার চলে আসি করটিয়া তে। ভাতের হোটেলে উদরপূর্তি করে এখানকার বিখ্যাত সন্দেশ কিনি খরচ হয় সাড়ে তিনশ টাকার মতো। এবার একটা রিকশা ১০ টাকা করে ভাড়া নিয়ে করোটিয়া জমিদার বাড়িতে যাই কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি যে তালা দেওয়া। দরজায় কড়া নাড়তেই এক খালা আসলেন তিনি বললেন যে তিনি গেট খুলে ভিতরে ঢুকতে দিবেন কিন্তু তাকে বকশিশ দিতে হবে। বললেন ৫০ টাকা দিতে দুইজন এর জন্য। উনাকে বখশিশ দিয়ে ভিতরে গিয়ে আস্তে আস্তে ঘুরে দেখলাম বিশাল বড় এলাকা টা। ঘুরে দেখা শেষ করে এবার আবার ২০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে নিরালা বাসস্ট্যান্ডে চলে আসলাম। বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ১৬০ টাকা করে দুটো টিকিট কিনে অপেক্ষা করলাম বেশ কিছুক্ষণ। বাস আসার পরে এবার সেই বাসে চেপে শেষ হলো অসাধারণ একটি একদিনের টাঙ্গাইল ট্যুর ।
এখানে দুইজন মানুষের টোটাল খরচ প্রায় ১৭৫০ টাকার মতো হয়েছে। আমরা ১৬ ডিসেম্বর গিয়েছিলাম বলে সব কিছুতেই একটু বেশি টাকা দিতে হয়েছিলো। যদি দেলদুয়ার বাদ দেন তাহলে ১৫০০ টাকা দিয়ে দুইজন খুব সহজে ঘুরে আসতে পারবেন আশা করি।
বি.দ্র. ঘুরতে গিয়ে আবর্জনা যেখানে সেখানে না ফেলে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলুন। পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন।
লিখা – উম্মে আইমান ( ফেসবুক পোস্ট থেকে সংগৃহীত )
রূপশ্রী/এম